
ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্কের দশটি প্রদেশের মানুষের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। সম্প্রতি তাদের পক্ষ থেকে ঢাকায় তুরস্কের একটি সংস্থার কাছে মানবিক সহায়তা হিসেবে নগদ অর্থ, কম্বল ও জ্যাকেট হস্তান্তর করা হয়। তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যে থেকে চাঁদা তুলে তুরস্কের মানুষের জন্য ৭০০ কম্বল এবং ২০০ জ্যাকেট কিনে দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার তুর্কি সহযোগিতা ও সমন্বয় সংস্থার (টিআইকেএ) ঢাকা অফিসে কিছু নগদ অর্থসহ ওই কম্বল এবং জ্যাকেটগুলো পৌঁছে দেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা।
টিআইকেএ বাংলাদেশের প্রধান সেভকি মের্ত বরিস বলেন, ‘তুরস্কের জাতীয় সংকটকালে আমাদের জন্য বাংলাদেশি জনগণের আন্তরিক সমর্থন দেখে আমরা খুবই আনন্দিত, এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছ থেকে অনুদান দেখে খুবই আনন্দিত।’
রোহিঙ্গা নেতা সাহাত জিয়া হিরো আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, ‘তুরস্ক আমাদের সংকটের (রোহিঙ্গা সংকট) শুরু থেকেই সহায়তা দিয়ে আসছে। তাদের এমন দুঃসময়ে আমরা কীভাবে কিছু না করে অলস বসে থাকি?’
এ অনুদানকে ‘ভালোবাসার উপহার’ বলে উল্লেখ করে জিয়া বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক সামর্থ্য সীমিত, তারপরও যা দিতে পেরেছি এটি আমাদের পক্ষ থেকে তুর্কি ভাই ও বোনদের জন্য সীমাহীন ভালবাসা এবং সংহতি বহন করে।’
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে ও দুপুরে যথাক্রমে ৭ দশমিক ৮ এবং ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে তুরস্কের দশটি প্রদেশ। ওই ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত হয়েছে প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াও।
এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও দেশ দুটিতে লাশের মিছিল থামেনি। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ২১৮ জনে।
এদিকে বিধ্বস্ত এলাকায় তীব্র শীতে উদ্ধার অভিযান চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ভূমিকম্পে যারা প্রাণে বেঁচে গেছেন তারাও খাদ্য, শীতকাপড় এবং নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে কষ্টে দিন পার করছেন।