
(জয়দেব চক্রবর্তী; কেশবপুর, যশোর)
যশোর-সাতক্ষীরা সড়ক সংলগ্ন কেশবপুর শহরের তেল পাম্পের পাশে কালর্ভাটের মুখ বন্ধ করে এক ব্যবসায়ীসহ ৫ ব্যক্তি মাটি ভরাটের কাজ করছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে মধ্যকুল এলাকা জলাবদ্ধতাসহ হাজারও বিঘা জমির ফসল উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। মাটি ভরাটের কাজ বন্ধে এলাকাবাসী উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার মধ্যকুল এলাকার মোড়ল পাড়া, কর্মকার পাড়া, দফাদার পাড়া, মোল্যা পাড়া, গাজী পাড়াসহ ৩/৪ গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি শত বছর ধরে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশের কালর্ভাট ও ব্রিজ দিয়ে হরিহর নদীতে নিষ্কাশন হয়ে থাকে। সম্প্রতি মধ্যকুল আলিম মাদ্রাসার সুপার মাওলানা কফিলউদ্দীন ওই জমি কেশবপুর শহরের ব্যবসায়ী তৌহিদুর রহমান, হাফিজুর রহমান, মাসুদুজ্জামান, শফিকুল ইসলাম ও মাস্টার দীপঙ্কর দাসের কাছে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করে দেয়। এ সময় ব্যবসায়ী তৌহিদুর রহমানসহ অন্য ক্রেতাগণ পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা না করে ৪/৫ দিন ধরে মাটি দিয়ে ওই ডোবা ভরাটের কাজ চালিয়ে। এলাকাবাসী বাধা দিলেও এর কোন কর্ণপাত না করে তারা ডোবা ভরাটের কাজ অব্যাহত রাখেছেন।
এলাকার ৮০ ঊর্দ্ধো বয়সী কৃষক অনিল কর্মকার, শাহীনুর রহমান জানান, মধ্যকুল বন্যাদূর্গত এলাকা। বছরে একমাত্র বোরো ছাড়া অন্য কোন ফসল আবাদ হয় না। এরপরও কালর্ভাটের মুখ ভরাট করলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে মানুষের বাড়িতে পানি উঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। জলাবদ্ধাতার কারণে শত শত কৃষকের হাজারও বিঘা জমি পতিত থাকবে। এলাকার কৃষকও কর্ম হারাবে। ফসল না হলে মানুষকে অর্ধহারে দিন কাটাতে হবে। যে কারণে এলাকাবাসীর পক্ষে আবুল কাশেম গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
গত শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা য়ায়, জমির ক্রেতাগণ ডোবার আড়াআড়িভাবে বাঁশের পাইলিং করে মাটি ভরাটের কাজ করছে। প্রতিদিন ২/৩ টি ট্রাক্টরে করে মাটি এনে কালর্ভাটের মুখসহ ওই ডোবা ভরাট করা হচ্ছে। ৫/৬ জন শ্রমিক মাটি সরানোর কাজ করছে। এনিয়ে এলাকার কৃষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানতে চাইলে জমি ক্রেতা ব্যবসায়ী তৌহিদুর রহমান বলেন, ঘেরের পানি সরানোর জন্যে ওই স্থানে কালর্ভাট বসিয়েছিল ঘের মালিক। ওই ডোবা দিয়ে কখনও এলাকার পানি নিষ্কাশন হতো না। তারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুজ্জামান বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। ১/২ দিন পর আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।